Header Ads

স্মৃতির পাতা থেকে বিলীন হয়ে যাওয়া বাঙালি বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশ্যে একটি ওয়েব সেমিনারের আয়োজন করল কলকাতার প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো।

2021 সালে 75 তম স্বাধীনতা দিবসে আজাদি কা অমৃত মহোৎসব পালন করছে সারা দেশ। এই উপলক্ষে ভারতের 
তথ্য ও সম্প্রসারণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও একটি ওয়েব সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল যার পরিচালনা করেন কলকাতার প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর মিডিয়া ও কমিউনিকেশন অফিসার শ্রীজিতা সাহা সাহু। আলোচনার বিষয় ছিল পশ্চিমবঙ্গের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরাঙ্গনারা। যাঁরা স্মৃতির পাতা থেকে বিলীন হয়ে গেছেন। এই সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার সাহা ইনস্টিটিউট ও নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের বিজ্ঞানিক ডঃ জিষ্ণু বসু, অভিজ্ঞ ও বরিষ্ঠ সাংবাাদিক কুুুমারেশ ঘোষ, রন্তিদেব সেনগুপ্ত, সুজিত রায় এবং এডিজি পিআইবি আরওবি জনি নামচু।
photo: midnapore.in

স্বাধীনতা সংগ্রামে অবদানের জন্য পুরুষ সংগ্রামীদের নাম বহুুল প্রচারিত। কিন্তু মহিলা সংগ্রামীদের অবদান ছাড়া এই স্বাধীনতা সংগ্রাম অসম্পূর্ণ। সেই সময় পুরুষদের পক্ষে এই আন্দোলনের অংশ হওয়া সহজ ছিল কিন্তু নারীদের আন্দোলনে পৌঁছানোর আগে সমাজের অগণিত শেকল ভেঙে ফেলতে হয়েছিল তাঁদেরকে। এর পরেও অনেক ভারতীয় নারী এই যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন। দেশে স্বাধীনতা এনেছিলেন। তাঁদের আত্মত্যাগ ভুলে যাওয়া যায় না। এই মহিলারা প্রতিকূলতার মধ্যেও দৃঢ় সংকল্প, মৃত্যুকে চোখে চোখ রেখে দেখার সাহস করেছিলেন। তাঁদের মাতৃভূমির প্রতি তীব্র ভালবাসা এবং তাঁদের আত্ম বলিদান বর্তমান সমাজের কাছে স্বাধীনতা সংগ্রামের উজ্জ্বল উদাহরণ। তবে আমাদের মনকে উজ্জ্বল করা এবং একটি উন্নত বিশ্বের জন্য সংগ্রাম করা এই বীরাঙ্গনাদের  উল্লেখ অনেক কম আমাদের ইতিহাসে। এই বীরাঙ্গনারা নিস্বার্থ ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন এবং তাঁদের জাতিকে স্বাধীন ও সমৃদ্ধ দেখতে তাঁদের জীবন বলিদান দিয়েছিলেন।


যখন ভারত তার 75 তম স্বাধীনতা দিবসে প্রবেশ করেছে আসুন আমরা কিছু অজানা সাহসী মহিলাদের দিকে তাকাই যারা স্বাধীন ভারত গঠনে অনুপ্রাণিত এবং সাহায্য করেছিলেন।


পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক বীরাঙ্গনা ছিলেন যাঁরা রাতারাতি ব্রিটিশ সরকারের ভিত্ত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। এই ভুলে যাওয়া নারী মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। কিছু বীরাঙ্গনাদের কথা আমরা বইয়ের পাতায় পড়লেও অনেকেই আজ ইতিহাসের পাতা থেকে বিলীন হয়ে গেছেন। যেমন কুমুদিনী ডাকুয়া, বীণা দাস, কল্পনা দত্ত যোশী, অম্বিকা খান, কুন্তী দাসী, শশীবালা দেবী এমন অনেক বীরাঙ্গনাদের নাম নতুন প্রজন্মরা জানেন না। মাতঙ্গিনী হাজরা, কনকলতা বড়ুয়া, অরুনা আসফ আলী, ভিকাইজি কামা, তারা রাণী শ্রীবাস্তব, মূলমতি, লক্ষ্মী সহগল, কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায়, কিত্তুর রানী চেন্নাম্মা, সুচেতা কৃপলানি এই বীরাঙ্গনাদের চর্চাও আজ কমই হয়।

এই সেমিনারে বরিষ্ঠ সাংবাাদিক কুুুমারেশ ঘোষ, রন্তিদেব সেনগুপ্ত ও সুজিত রায় তাঁদের সাংবাাদিক জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বীরাঙ্গনাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। ডঃ জিষ্ণু বসু স্বাধীনতার 75 বছরে 75 জন বাঙ্গালি বীরাঙ্গনার আত্ম বলিদানের কথা সমন্বয়ে  একটি পুস্তক প্রকাশের প্রস্তাব রাখেন। এবং মাননীয় শিক্ষক অখিলেশ বন্ধু মহাপাত্র মেদিনীপুরের  হিজলী কারাগারটিকে ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন রাখেন প্রধান মন্ত্রীর কাছে। বিশিষ্ট জনেরা মনে করেন বাংলা তথা দেশবাসীর নবীন প্রজন্মের কাছে বাঙ্গালি বীরাঙ্গনাদের মহান আত্মকথা তুলে ধরাই হবে তাঁদের কাছে আসল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন।

No comments

Powered by Blogger.