Header Ads

7 বছর পর মৃত জওয়ান ধর্মভীরের ফিরে আসাটা ছিল অলৌকিক ঘটনা ।

রমেশ দাস: প্রাক্তন গ্রুপ ক্যাপ্টেন 

একদম সিনেমার গল্পের মতো, অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। মৃত সৈনিক ধর্মভীর দীর্ঘ 7 বছর পর ফিরে এলেন বাড়িতে। এবং তিনি ভাল আছেন এবং বেঁচে আছেন। ধর্মভীর যাদব ভারতীয় সেনাবাহিনীতে একটি দুর্ঘটনার পরে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল কারণ তাঁকে কখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি বা তাঁর পক্ষ থেকে কোনও যোগাযোগ করা হয় নি।তাঁর মৃত্যুর সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছিল।এবং তাঁর পরিবার এটিকে দুর্ভাগ্য হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছিল। তবে মৃত ধর্মভীর 7 বছর পর যেদিন বাড়ির দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ান সেদিন পরিবারের সদস্যরাও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন।

ধর্মভীর রাজস্থানের আলওয়ারের বেহরোর শহরের বাসিন্দা। 2009 সালে দেরাদুন পোস্টে একটি দুর্ঘটনার পর তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। যেহেতু ব্যাপক অনুসন্ধানের পরেও তাঁকে পাওয়া যায়নি, সেনাবাহিনী তাকে মৃত ঘোষণা করে এবং 2012 সালের মধ্যে তাঁর পেনশনও শুরু হয়ে যায়।

অন্যদিকে ধর্মভীর জীবিত ছিলেন কিন্তু তিনি তাঁর স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন। অতীতের কিছুই মনে ছিল না তাঁর। দুর্ঘটনার পরে কয়েকজন গ্রামবাসী তাঁকে রক্ষা করেছিলেন। এবং তাঁরাই ধর্মভীরের যত্ন নেন। তিনি তাঁদের সঙ্গে গ্রামেই থাকতে শুরু করেন। তিনি তাঁর অতীত জীবনকে সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছিলেন। চাকরি ও স্মৃতিশক্তি না থাকায় তিনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন এবং বেঁচে থাকা তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। এই ভাবেই 7 বছর কেটে গেল।
ভবঘুরে হয়ে একদিন যখন ধর্মবীর হরিদ্বারের রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তখন তাঁর সঙ্গে আরও একটি দুর্ঘটনা ঘটে। একটি মোটরসাইকেল তাঁকে ধাক্কা দেয় এবং তাঁর মাথায় ধাক্কা লাগে।আশ্চর্যজনকভাবে ধাক্কাটি তাঁর সমস্ত স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে দেয়। দুর্ঘটনার পরে মোটরসাইকেল চালক ধর্মভীরকে তাঁর চিকিত্সার জন্য 500 টাকা দেন। এবং তাঁকে আঘাত করার জন্য ক্ষমাও চান।স্মৃতিশক্তি ফিরে পেয়ে ধর্মভীর কোনও হাসপাতালে যাননি। 500 টাকাতে চিকিৎসা না করে সেই টাকা দিয়ে বাসের টিকিট কাটেন ধর্মভীর। পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার আনন্দ তাঁকে বিভোর করে তুলেছিল। কিন্তু তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য এটি পুরো শোকের মুহূর্ত ছিল। তাঁর বাবা প্রথমে এই ভয়ে দরজা খুলতে অস্বীকার করলেন যে তিনি যাঁকে দেখছেন সে ভূত নয় তো! বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ধর্মভীরকে।
অবশেষে ধাক্কা দেওয়ার পরে দরজাটি বাবা খুলেছিলেন। পরিবারের সদস্যরা তাঁদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ধর্মভীরের স্ত্রীর কাছে এটা একটা অলৌকিক ঘটনা ছিল যখন তাঁর বাচ্চারা তাদের বাবাকে ফিরে পায়।

ধর্মভীরের বাবা যিনি অবসরপ্রাপ্ত চাকুরীজীবি ছিলেন, তিনি ধর্মবীরের ইউনিটকে ছেলের ফিরে আসার খবর জানান। এবং দীর্ঘ সময় দেরি করার পর জওয়ান ধর্মভীর আবার তাঁর ইউনিটে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
ধর্মভীরের জীবনের গল্প অলৌকিক ঘটনার মতো। তবে এটি একটি বাস্তব সত্য ঘটনা।

No comments

Powered by Blogger.